ভাতিজার প্রেমে মগ্ন চাচি, পরকীয়া প্রেমে বলি হলেন চাচা

post_image

ছবি: সংগৃহীত

ভাতিজা শাহিনের প্রেমে মগ্ন সালমা বেগম, করলেনও বিয়ে। ভাতিজার হাত ধরে হলেন নিরুদ্দেশ। মাস তিনেক তার সঙ্গে কাটানোর পর ফিরে এলেন আগের স্বামী শহিদুল ইসলামের ঘরে। সব ভুলে শহিদুলও তাকে নিলেন আপন করে। তবে নতুন করে সংসার শুরু করলেও সালমার মনে ছিল ভিন্ন পরিকল্পনা। যখন তা বুঝলেন শহিদুল, হতে হলো তাকে খুন।

ঘটনাটি বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সূত্রাপুর আখেরি পাড়া গ্রামের। ওই গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের দুই বছরেরও বেশি সময় পর ৫৫ বছর বয়সী আব্দুর রশিদ নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হবে। এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেরপুর উপজেলার জোড়গাছা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ২০২০ সালের ৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়ির পাশেই স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক শাহিন খন্দকারের হাতে খুন হন শহিদুল। শাহিন ও তার সহযোগীরা ডোবার পানিতে মাথা চেপে ধরে নৃশংসভাবে খুন করেন শহিদুলকে।

নিহত শহিদুল শেরপুর উপজেলার সূত্রাপুর আখেরি পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্ত্রী সালমার পরকীয়া প্রেমিক শাহিন ও গ্রেফতার হওয়া আব্দুর রশিদও একই গ্রামের বাসিন্দা। তাদের বাড়ি পাশপাশি।

জানা গেছে, শাহিন খন্দকার প্রতিবেশী সম্পর্কে নিহত শহিদুলের ভাতিজা। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় শহিদুলের স্ত্রী সালমার প্রেমে মগ্ন হয়ে পড়েন ভাতিজা শাহিন। শুরু হয় শাহিন ও সালমার পরকীয়া প্রেম। একপর্যায়ে তারা বিয়ে করে গ্রাম থেকে পালিয়ে যান। তবে এর মাস তিনেক পরে আবারো ফিরে আসেন গ্রামে। কিন্তু একসঙ্গে ঘর করতে নয়, সালমাকে স্বামীর ঘরে ফিরে দিতে। সালমা প্রতিবেশী ভাতিজাকে ডিভোর্স দিয়ে শহিদুলের সঙ্গে নতুন করে সংসার শুরু করেন। তবে তাদের পরিকল্পনা ছিল শহিদুলকে খুনের। নতুন করে সংসার শুরুর প্রায় দেড় বছরের মাথায় পরিকল্পনা মোতাবেক ডোবার পানিতে মুখ চেপে ধরে শহিদুলকে খুন করা হয়। পরে একই বছরের ১০ জানুয়ারি নিহত শহিদুলের ভাই নজরুল বাদী হয়ে সালমা, শাহিননসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে শেরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাাটি তদন্ত করেন তৎকালীন শেরপুর থানার এসআই রুম্মান হাসান। তদন্ত শেষে মামলা থেকে এজাহারভুক্ত দুইজনকে অব্যাহতি দেন তিনি। তবে তদন্তে আরও চারজনের নাম উঠে আসে। পরে ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে বাদীপক্ষ এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি দেয়। আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেয়। সিআইডি দাবি করে, আব্দুর রশিদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত আছে। এ কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এসআই রুম্মান হাসান জানান, পরকীয়ার জেরে পরিকল্পিতভাবে শহিদুলকে হত্যা করা হয়। মামলার পর শহিদুলের স্ত্রী সালমা ও পরকীয়া প্রেমিক শাহিনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা জানান, পরকীয়ার জেরেই শহিদুলকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল। পারিবারিক শক্রতার জেরে আব্দুর রশিদকে আসামি করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রশিদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। এ কারণে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

মামলার বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সিআইডি’র পরিদর্শক আব্দুল হান্নান জানান, পরকীয়ার জেরেই শহিদুলকে হত্যা করা হয়। শহিদুল হত্যাকাণ্ডে রশিদের সম্পৃক্ততা আছে। রশিদকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।

সকল খবর

সকল খবর পড়ুন